চলতি বছরের মধ্যে ৪৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। জাকির হোসেন। আগস্ট চলে এলেও এখনো মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়নি। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দেশব্যাপী এই পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হতে পারে। অধিদপ্তরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই নিয়োগ অক্টোবরের শেষ দিকে বা নভেম্বরের শুরুতে হতে পারে।
তবে চূড়ান্ত নিয়োগ নির্ভর করবে অর্থ বিভাগের অনুমোদনের ওপর। চলমান অর্থনৈতিক সংকট অব্যাহত থাকলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে বলে মনে করছেন অধিদফতরের কর্মকর্তারা। সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের এই পরীক্ষা তিন ভাগে অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা এখন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। পরীক্ষার ফলাফল একসাথে প্রকাশ করা হবে। এই পরীক্ষার জন্য কোন অপেক্ষমাণ তালিকা থাকবে না।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফল প্রকাশের পর নিয়োগের জন্য তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করবে মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর 20শে অক্টোবর 2020 তারিখে 13তম বেতন গ্রেড সহকারী শিক্ষকের 32 হাজার 577টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সে সময় পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। এরই মধ্যে আরও ১০ হাজার শিক্ষক অবসরে গেছেন।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ২০২২
বর্তমানে, সারাদেশে 42,500টি শূন্যপদ নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে। আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্যপদ ও প্রজ্ঞাপনের পরের শূন্যপদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই নিয়োগে ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষায় ৪০ হাজার ৮৬২ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৫৯৫ জন এবং তৃতীয় ধাপে ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। বড় এই নিয়োগ পরীক্ষার শুরুতেই বিক্ষোভ করেছেন প্রার্থীরা।
তারা ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান। কিন্তু তারপরও দেশব্যাপী এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় দুর্নীতি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা 2019 অনুসরণ করে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হচ্ছে। উত্তরপত্র মূল্যায়ন সহ ফলাফল প্রণয়নের যাবতীয় কাজ সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয়।
এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বেআইনি হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। অধিদফতরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এত শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আমরাও একটু সন্দিহান। নিয়োগ পিছিয়ে গেলে আমরা অবাক হব না। কারণ এসব শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ হবে। সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। চলতি মাস থেকে এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শহরের আরও শিক্ষকের ইচ্ছায় 11টি শহরের বদলি প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের চুড়ান্ত ফলাফল ২০২২
প্রাথমিক শিক্ষক বদলি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। এই বদলি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগ বিলম্বিত হতে পারে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফল প্রকাশের পর নিয়োগ পেতে এসব শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়ার কারণে অপেক্ষা করতে হতে পারে। বদলি প্রক্রিয়া শেষে শূন্য পদের কারণে ভবিষ্যতের জটিলতা এড়াতে চায় মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুহিবুর রহমান বলেন, আমরা ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফলাফল দেব। অক্টোবরে তারা নিয়োগ পেতে পারেন। নভেম্বরও হতে পারে। আমরা দ্রুত তাদের নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি।