সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জাল সনদধারী শিক্ষক এর তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছে অনেকেই। জাল সনদধারী শিক্ষক তালিকা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে শিক্ষা পরিমণ্ডলে। সম্প্রতি দৈনিক আমাদের বার্তা তালিকা প্রকাশ শুরু করলে আরো বিস্তারিত তালিকা প্রকাশের দাবি উঠেছে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব মহল থেকে। অনেকেই এই পত্রিকার অফিসে ফোন করে জানিয়েছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং অনেকেই জাল সনদধারী শিক্ষকদের তথ্য পাঠাচ্ছেন।
এখন পর্যন্ত 6 টি পর্বে মোট পাঁচ শতাধিক জাল শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করেছে দৈনিক আমাদের বার্তা। এসবের মধ্যে রয়েছে মাধ্যমিক স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক বৃন্দ।
আরো বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে পত্রিকাটি। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এমনকি শিক্ষক সংগঠনগুলো চাইছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে জাল সনদ নিয়ে কর্মরতদের তালিকাও যেন প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক নিবন্ধন, স্নাতক, কম্পিউটার সনদ ইত্যাদি জাল করার প্রবণতা থাকলেও প্রাইমারি স্কুল গুলোতে মূলত জাল করা হয়েছে একাডেমিক সার্টিফিকেট। যার বেশিরভাগই ঘটেছে দেশের কমিউনিটি স্কুলগুলো স্থাপন, এমপিওভুক্তি ও সরকারিকরণের সময়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জাল সনদধারী শিক্ষকদের তালিকা
2013 সালে 26 হাজারের বেশি স্কুলকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। সরকারিকরণের পর রাতারাতি নিয়োগ দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠাতাদের আত্মীয়-স্বজনকে। এভাবে নিয়োগ প্রদানে অনেকেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না। তাই এমপিওভুক্তি এবং সরকারিকরণের পরে তাদের প্রয়োজনীয় ডিগ্রী অর্জন করে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন-
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ এর তারিখ
জেলা এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, সরকারিকরণের সুযোগ নিয়ে অনেকেই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ডিগ্রী অর্জন করলেও অনেকেই ডিগ্রী , অনার্স, উচ্চমাধ্যমিক সনদ জালিয়াতি করে জমাদান করেছেন। সরকারিকৃত অনেক শিক্ষক তাদের নিজের নাম ঠিক মতো লিখতে পারে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ছাত্র পড়ানোর সক্ষমতা না থাকায় এসব শিক্ষকের ছাত্ররাও প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো শিখতে ব্যর্থ হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন, অনুসন্ধান হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের চেয়ে প্রাথমিকে অনেক বেশি জাল সনদধারী শিক্ষকের সন্ধান পাওয়া যাবে। এর মধ্যেই স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নেওয়া বেতন ভাতার টাকা ফেরত দেয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি অবিলম্বে প্রাথমিকেও একই পদ্ধতিতে ভুয়া সার্টিফিকেট ধারী শিক্ষকদের তালিকা করে অবৈধভাবে নেওয়া বেতন ভাতার টাকা ফেরত নেওয়া হোক। একই সঙ্গে জালিয়াতির দায়ে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
সূত্রঃ দৈনিক আমাদের বার্তা/ দৈনিক শিক্ষা